চন্দন চট্টোপাধ্যায়
উপদেশ
১.
হেঁট মুখে চলতে নেই, রাস্তা জিরাফ !
যে নিঃশব্দ পদচিহ্ন মানুষ চেনাতো--
এখন মানুষই ভুলেছে পথ
নতুনত্বে চোখ রেখে জিরাফ হাসছে !
২.
নির্জন ল্যাম্পপোস্ট দুহাতে বাজালে
ময়ূর নাচবে, মেঘভাঙা বসুধারা হবে।
ভালো হয়, যদি ভ্রূণের উচ্ছিষ্ট হয়ে
গোকুল-পৃথিবীময় বেড়ে উঠতে পারো !
৩.
দুকান বন্ধ রাখো-- শুনবে শস্যময় স্বর ;
উঠোনের খই উড়ে স্বপ্নে ভাসবে।
ছায়াঘরে জ্যোৎস্না এলে
ঘুলঘুলির ভিতর সাদা পায়রা ঘুমাবে।
৪.
সব শোক নশ্বর, সময় প্রমাণ।
ভেজা চোখ খুললেই ভোর হয়, রোদ--
জন্ম-মৃত্যু উভয়ের কান্না দোসর,
ব্যথাময় বরফের জলজ সফর....
--------------------------------------
উৎসর্গ সিরিজের কবিতা
যেভাবে শূন্যে বিলীন দধীচির তনু,
সেইভাবে রাতময় দরজা খুলে
বাতাস মাখানো ডাকে একত্রে বসলাম
কথা হলো অন্ধকার নিয়ে।
মহাশূন্যে যতবার বলেছি নিয়ে চলো,
ততবার কিছু অবাধ্য সেমিকোলনের পাশে
বসিয়ে দিয়েছো।
যতবার পা বাড়াই
পূর্ণচ্ছেদ পাঁচিল হয়ে গেছে।
অথচ হাটখোলা পথে আর ঘাস নেই
শিশির পিছলে আর পড়ে যাওয়া নেই,
তবু বলে যাচ্ছ পূর্ণাঙ্গ বাক্য গঠন ! আর
যতই পূর্ণ করি, প্রসারিত হয় শূন্যস্থান।
শুধু একটা প্রয়াগ চেয়েছিলাম--
নিরক্ষর ভেবে তুমি
মিশ্রণের অঙ্কে কেবল ভুল ধরে গেলে !
------------------------------------------------
চেনা জানা
আমাকে চিনতে দাও
ঝুলন্ত অবেলায় আমার প্রগাঢ় হাত
ছুঁয়ে দ্যাখো। ধরো। হাত মেলাও। পারলে
ঈষদুষ্ণ চুম্বনে তড়িদাহত করো, দেখবে
উচ্ছিষ্ট প্রান্তর কতটা অবনত।
কিভাবে আদিম রোদ শরৎ হয়েছে !
মানুষ নির্জনতর কখনও কি হয় ?
শাণিত ঘুড়ির মতো উড়ছিল ক্রমশ,
দুলছি....কাঁপছি....
আমাকে চিনবে না কেউ।
চিনতে শেখো-- নাহলে বাধ্য লিপিগুলো
একদিন চিনিয়ে দেবে তোমার অন্ধতা।
তখন আমাকে খুঁজতে গিয়ে নিজেকে হারাবে !
চমৎকার কবিতাগুলি মন আচ্ছন্ন করল।
উত্তরমুছুন