গুচ্ছ কবিতা : অভিজিৎ দাস কর্মকার






 




অভিজিৎ দাস কর্মকার


সুহাসিনী 
বাড়িতে। চা হাতে। সকাল ৭:২৭। ৩ আগস্ট 

যে পথটির ছটফটে সঙ্গমে নিজেকে ভাসালে নদী, সে দ্বন্দ্বের সোঁদায় নির্লিপ্ত চোখ গর্ভের বিরোধ। তিন আঙুল ফাঁক দিয়ে বয়ে চলে আগুনের ধারা : ব্রহ্ম-অলাত। উচাটন মন, বিশ্বস্ত শরীরের দ্রবণে  সুহাসিনী শ্রমের মিশ্রণ। একদিন কালিন্দী বাঁধের স্ফটিক জলে, নিভৃত নিয়মের কুলুকুল স্বর অতিক্রম করবে অসুখ। ওগো রাত, দেখে যাও; ঠোঁটের আর্তনাদে ঋতু এসে পরিশ্রান্ত দাঁড়িয়ে।  এখনো শুধু রক্তাক্ত মধু-ত্রিবেণী! মসৃণ নিদ্রার ভিতর সিঁধকাটা ক্ষতগুলো, শুশ্রূষা চায়। নদী বলে, তোমার কবিতায় লিপিবদ্ধ হবো আমি,আর আমার তপস্যি শ্রাবণের অনন্তরেণুকা …


৫]

বৈরাগ্য  
বিকাল ৫:৩৮। ন্যাশানাল মাঠ। ৪ আগস্ট 

জিরিয়ে নাও ক্লান্তি। আশ্বাসের ভেতর স্থবির আছে বিগত বর্ণালি জট। শ্রীমতী নদী, তুমি দুঃখের অছিলায় বহন করো অশ্বত্থের বৈরাগ্য। পাহাড়ের কাছে এসে ধীর, নির্জন রতি। আঁচলের ভীষণ মোহ ক্ষয়ে ক্ষয়ে রোগা কাঁধ : বেলা শেষ। আঁধার আড়ালে ফুরফুরে পাতা ওড়ে, ইতিহাস বলে যায় রাখালের গান্ধর্ব-বাঁশি। নিপুণ চোখের রসে, আলো স্নান সারে নীলঘনশ্যাম। অতঃপর, আমি দূরবর্তী সন্ধের নিস্তরঙ্গ শ্মশান…


৬]

সম্পর্ক 
কর্মস্থল। বিকেল ৩:২২। ৫ আগস্ট 

প্রেমিকার স্তনের অদ্ভুত আড়ালে দাঁড়িয়ে আমি একা। আবছা সম্পর্ক তীব্র প্রতিবাদে স্তব্ধতার সামনে টান করে বাঁধা। এ দেহ, পাহাড় সমান নির্বিকার। রাস্তার প্রতিটি সদানন্দ মোড় বেঁকেছে মহিলা নদীটির প্রতিবিম্বে। আকারহীন কোলাহল; দুর্বল অনুভূতির মর্যাদা দাও। অমীমাংসিত কবিতা, পাঠের সময় অ্যাতো সমারোহ কীসের! কতো প্রহেলিকা সময়ের শিরার ভিতর ক্রিয়াপদ খুঁজে চলে। তুমি চোখ মোছো রেশমের আঁচলে। অথচ জল গড়িয়ে যায়, ক্রমশ উত্তরে। চুমুর বন্টন শেষ হলে, নিষ্পলক জঙ্গলে একবার দেখা করে এসো আমার কান্নাদের সাথে। কিছু তক্ষক তাদের যত্ন করে এখনো…