দুটি কবিতা : প্রতাপ মুখোপাধ্যায়

 







প্রতাপ মুখোপাধ্যায়


আমি ও বরকত ।।


বরকত পুলিশের গুলি খেয়ে মরে যাওয়ার আগে বলেছিল, বদলা নিস।
আমি ছাড়া একটি পাকুর গাছ, ঘাস, ঘাসের নিচে কালো-ভেজা মাটি এবং 
বরকতের পরিত্যক্ত রাইফেলটি শুনেছিল শেষ কথাগুলি ।

কিছুক্ষণ পর রক্ত লাল থেকে ক্রমশ কালো হয়ে যেতে লাগলো, 
চারিপাশ থেকে জড়ো হতে শুরু করলো, হিংস্র পোকার দল, 
জঙ্গলের আকাশের রং বিপজ্জনক ভাবে বদলে যেতে লাগলো ।

তারপর গভীর জঙ্গল দিয়ে নিজেকে ঢেকে নিয়েছি, শৃগালের ডেরায় শকুনের মাংস, 
এবং শকুনের গৃহে শৃগালের হাড় চিবাতে চিবাতে, প্রত্যক্ষ করেছি, 
আমার পাকস্থলী ত্বকের ডোরা কাটা দাগ দেখে, পরম নিশ্চিন্তে, হজম প্রক্রিয়া শুরু করেছে ।


বর্ষা নামা ।।

বুলু রানির খুব আনন্দ, বৃষ্টির বাহানায় কাজ কামাই করবে, ঢঙি‌ বৌদি টাইট ।

প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত 'বরোসা মুখর' রাতে
সাফ ফেল, বৌ ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দিয়েছে ।
রবি খুড়োর কেত্তন শুনতে শুনতে ( আসলে, শোনাতে শোনাতে ) 
মনে মনে ডাক্তার গগন হাতি কে উদুম খিস্তি দিচ্ছে, ছ'শো টাকা ফিস নিলো 
ওষুদে কোনো কাজ হলো না ! 
আড়‌ চোখে কিচেনের দিকে তাকিয়ে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ করতে করতে ভাবছে,
দুপুরে একটা চান্স নেওয়া যায় কি না !

কবি অধ্যাপক এবং সাহিত্য প্রোমোটার তিপ্পান্নতেও তরুণ গৌরহরি সরখেল আজ বেজায় ক্ষুব্ধ,
তাঁরই আবিষ্কার উঠতি কবি বুল্টি রাহা , উস্কোখুস্কো চুল আর ক্লিন সেভড্ চরম আঁতেল
তপোধীর দণ্ডপতের সঙ্গে ইন্টুমিন্টু করছে, ডায়মন্ড হারবার, দীঘা সহ অনেক অবৈধ জায়গায়, 
দুজনকে একসঙ্গে দেখা গেছে । 
তাঁরবেলা একাডেমি আর নন্দন, বড়জোর ইয়ে .. আর এদিকে .. হাতে রামপুরিয়া থাকলে 
কবি অধ্যাপক .. এখুনি উস্কোখুস্কোর পেটে ঢুকিয়ে দিতেন।
একটু রাগ কমলে, বুল্টির সঙ্গে তাঁর পৌনে এবং হাফ ম্যাচিওর রোমান্স সিনগুলো মনে পড়তেই,
 তিনি নাক ঝাড়তে বাথরুমে ঢুকে গেলেন ।

সিনিয়র সাইকিয়াট্রিস্ট ডাক্তার অনন্ত পাল
হাসপাতালের হার্টথ্রব, জুনিয়র নার্স গার্গী সমাদ্দারকে নিয়ে সিঙ্গাপুর উড়ে গেলেন ।
মেঘ মুচকি হাসলে, ডাক্তার পাল অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছিলেন ।

আফরিন, বৃষ্টি এবং সুবর্ণরেখা তোমার নাম দিলো রৌদ্রময়ী।
আমি কি এই নামে তোমায় ডাকতে পারি ?