কবিতা : অর্ঘ্য দে

 





অর্ঘ্য দে


অলীক সওয়ারি                



এক

 

বেয়াদপ হাঁচি আর কাশিতে

উড়ে গেল হিমের পর্দা,

ভিতরে টুকটুকে বউ

           উল বুনে চলে

পাঁজরে কাঁকনের রিনরিনে বোল 

  

দুই

 

পেরিয়ে এসেছি দ্রোহকাল, রক্তবৃষ্টি 

ঋতুর ভাঙা আরশিতে মুখ বাড়ায়

ভাদ্রের নিদাঘ; আয়ত অভিশাপ

গলে গেছি কিছুটা বিষতাপে,

কিছুটা বরফের কল্পনায় তোমাকে ভেবে

 

তিন

 

বিচ্যুত স্রোতের মতো বয়ে এলাম। অতলে উঁকি মারে অতীত, স্থাবর-জঙ্গম

তুমি এলে ফুল-ফুল আঁচল উড়িয়ে, পৃথিবীর শেষ প্রান্তে। বর্ণালি প্রজাপতির ঢল নেমেছে

ভূমিহীন আধিবাসী যুবক বাঁশি বাজায়, যুবতী শোনে মন্ত্রমুগ্ধ। ভুলে যাওয়া চেনা সুর যেন,

গুনগুন করে উঠি। কিছু ঝরাফুল কুড়িয়ে নিয়ে সেই যুবক যুবতীর খোঁপায় সাজায়

সন্ধ্যার উপত্যকায় সূর্য উলের বলের মতো গড়িয়ে যেতেই কিছুটা কুঁকড়ে গেলাম।

তোমার ফেরার সময় হয়ে এলো। গবাদি পশুদের গলায় বাঁধা ঘণ্টিতে হঠাৎই

টান পড়ে ফিরতি হাওয়ায়। গৃহহারা মানুষেরা দল বেঁধে ঘরে ফিরে যায়।

শুধু আমার আর ফেরা হলো না।  

  

চার

 

শালবনের মাথার ওপর চাঁদ ---

সন্ধের আয়ুষ্কালে প্রত্যয়ী

চিঠি লেখে শাল পাতায়, সফেদ অক্ষর

চুইয়ে পড়ে আমার ভ্রান্তপথে

 

আমার ঘর ঠিক কোথায় ছিল?

গরু খোঁজা খুঁজি..... 

ডাকঘরে ঝোলানো চিঠির বাক্স থেকে

আমার নিরুদ্দেশের গল্প ভেসে আসে

 

বুকের ভিতর হু হু  ফাঁকা মাঠ, হাহাকার

শীর্ণ ন্যাড়া গাছের ডালে জড়িয়ে যায়

মেঠো রাতচরা পাখির মতো।