মারুফ আহমেদ নয়ন
১।
তোমাকে ভুলে যাবো
--------------------------
তোমাকে ভুলে যাবো। দূরে কোথাও পালিয়ে যাবো। অথচ আশ্চর্যজনক ভাবে পৃথিবীর সমস্ত পথ তোমার পায়ের কাছে এসে থেমে গেছে।
আমি একটি সূর্য গোলক হাতে নিয়ে নির্ণয় করি আমার মানব ছায়ার দৈর্ঘ্য প্রস্থ। এভাবেই ক্ষয় করে ফেলি সমস্ত দিন। মরুকরণের দিকে ধাবিত মন, রাত্রি জুড়ে নামিয়ে দেয় গভীর শীতকাল।
শুয়ে থাকি ভেজা ঘাসের গালিচায়, আমার দু-চোখ ভরা তোমাকে দেখার ক্লান্তি। শরীর যেনো অসুখের আঁতুড়ঘর। জীবন যেনো ঝুলে আছে নার্সিং হোমের জানালায়, এমন একটি জীবনকে তুমি কি করে উপেক্ষা করো। দেখো, তোমাকে পাবার সম্ভাবনা সমূহ ফুল হয়ে ঝরে যায়।
।২।
ইতর
------
আমি কেনো ইতরের মতো তোমার কাছে যাই। গা ঘেঁষে পড়ে থাকি। ভিক্ষুকের মতো বিনয়ী হয়ে কামনা করি ভালবাসা। তুমি ভরা মজলিশে অপমান করো, ঘাড় ধাক্কা দিতে চাও।
আমি কিছু বলি না। মন খারাপ হলে আমি হাত দেখি, হাতের বিচ্যুত রেখা গণনা করি। মধ্যমা ও কনিষ্ঠা সাথে পরিচয় ঘটানোর চেষ্টা করি। তুমি পূর্বে যেতে বললে আমি পশ্চিমে যাই।
জানোই তো, আমি বহুকাল নরকের যাবার পথ ভুল করে তোমার কাছে ফিরে এসেছিলাম। কি এমন অপরাধ তোমার কাছে, ভেঙ্গে চূর্ণ বিচূর্ণ হবো একবারও ভালবাসি শব্দটি উচ্চারণ করবে না।
।৩।
জীবন যেমন হতে পারতো
----------------------------------
মার্চ মাস, জিরাফের মতো ঘাড় উঁচু করে তোমাকে দেখি। মাঠে মাঠে ঘাস খাই আর পদ্য লিখি। মানুষ বলে প্রেমে পড়ার স্বভাব। তোমাকে বলি, জীবন আরও সুন্দর হতে পারতো।
তুমি পেতে পারতে উচ্চ মর্যাদা। তুমি হতে পারতে শাহাজাদী আমি বাধ্য গোলাম। এই ভেবে উতলা হয়ে উঠে মন। ঘর থেকে বেরিয়ে চোখে পড়ে আমার সমাধিলিপি।
রোমান অক্ষরে লেখা জন্মপরিচয়, মৃত্যুর তারিখ ও সন। মানুষ হিসেবে এতো ভ্রান্তি আমার, তোমার ছায়ার কাছে আমি কাটা পড়ে যাই।
। ৪।
অর্কিড
----------
তোমার মনের ভেতর বেড়ে উঠছে অর্কিড। দূর থেকে ভাবি ক্যাকটাস, ফড়িং এর মতো উড়ে যাবো। যেতে পারি না, প্রবেশ করি স্যাঁতসেতে অন্ধকার বনের ভেতর, যেনো আদিম মানুষ। রপ্ত করতে হবে শিকারের পদ্ধতি।
অথচ ব্যাধের মতো এ জীবনে কেবল তোমাকে বুঝতে দেরী হয়ে গেলো। একটি অজগরের শ্বাস-প্রশ্বাসের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তারপর আগুনে ঝাঁপ দেবার বদলে তোমার প্রতিকৃতি বুকের মধ্যে নিয়ে ঘুরছি। যেনো মানুষের বেশে এক রাক্ষস।
কেবল তোমাকে ভালবেসে নিজেকে গিলে ফেলি। যন্ত্রণায় ছটফট করো, আমার না লেখা কবিতা
প্রতিটি কবিতা অনন্যতায় ভরা
উত্তরমুছুন