গুচ্ছ কবিতা : সুজিত রেজ

 




সুজিত রেজ


নুভূতি
---------------

যখন তখন সে কেন আসে 
বাউলরাজার সুরেতে ভাসে
রবীন্দ্রনাথ ও কালিদাসে
                     যখন তখন।।

মাহ ভাদরের সবুজ ঘাসে
পউষ মাসের সর্বনাশে
জ্যোৎস্নারাতের বনানীবাসে
                     তূরীয় চলন।।

কী কথা বলার ইচ্ছা তাঁর
কোন উদ্দেশ গোপলীলার
স্খলিত শিথিল বেদনাভার
                     অসহনীয়।।

নিথর দেহের উপশিরায়
গোপনকথার নীরবতায়
জীবননদীর বক্রতায়
                     দুর্দমনীয়।।

মন্দাকিনীর কুচিপাথরে
রেকঙপিওর কল্পাদ্বারে
চন্দ্রশিলার তালবিহারে
                     অকল্পনীয়।।




অন্তর্লীনা
------------------

দ্বিধা করিনি কোনদিন, যা কিছু দেওয়ার ছিল
                                           দিয়েছি তোমাকে।
দু'হাত উজাড় করে অথৈ লাবণ্যপূর্ণ প্রাণ,
সহজ সতেজ জীবনের সরল কমা-কোলন।

কিছুটা প্রাণের গুঁড়ো পারো তো মাখিয়ে দিয়ো।
চোখের কোলের চিকচিক খুশিবালি                            বিলিয়ে দিয়ো।
রৌদ্রের পালক-বিছানায় আমাকে সঙ্গী কোরো।

কী করে বোঝাব তোমায় 
                                   তুমি অপরিহার্য আমার!
বোঝো না বোঝো আমি কান পেতে রই,
নখের কিনার খুঁড়ে মনের মিনারতলে
                                          কুতুবমিনার গড়ি,
টান করা চিবুক ধরে অগণন নক্ষত্র চুপচুমু খায়।




পুরুলিয়া
___________

ঝালদা-হাঁড়িতে দু'টাকা কিলো চাল ফুটছে
অন্নপূর্ণা মন্ত্র উচ্চারণ করতে করতে
গড় পঞ্চকোটের ভগ্ন স্তম্ভ চোঁয়া লাল জলে
আদিবাসী নৃত্যের তালে তালে

মহুয়া মাতালের পদক্ষেপে
দুর্গা ফলস্ ঝরে পড়ছে অস্ট্রিক শব্দমালায়

গরম পিচচুমায়
বান্দোয়ানের দলছুট হাতির পায়ে ফোস্কা-জ্বালা

রাঁচি-হাতিয়া এক্সপ্রেস থেকে
পিলপিল করে নেমে আসছে
শালপ্রাংশু দেশোয়ালি

অযোধ্যা পাহাড়ের পদচাতালে ঝুঁকে পড়া রোদ
শুষে নিচ্ছে রামের ছৌমুখোশ