অরুণকান্তি ঘোষ
কোন দেশে যাবে বলেছিলে?
তুমি অপেক্ষায় ছিলে
কবে রেললাইন পাতা হয়ে যাবে
কবে শিমূলে পলাশে লালে লাল
কবে পরিযায়ী পাখি ঝাঁকে ঝাঁকে -
কথা ছিল যাবে, সঙ্গে নিয়ে যাবে।
কথা ছিল যাবে, সঙ্গে নিয়ে যাবে -
তবু সময়ে গেলে না।
বলেছিলে, এ তো নিজদেশে যাওয়া।
নিজদেশে যাওয়া ! নিজদেশে যেতে
এতই কি অপেক্ষার ছিল?
দিন গেলে রাত, আবার রাতের পরে রাত।
কারা যেন ফাঁদে অভিসন্ধি, চরিত্ররা আসে
কিশোরী রমণী হয়, কিশোর পুরুষ
উথালিপাথালি ছুটে যায়
বারুদ বন্দুক নিয়ে হাঁটে।
তারপর, রেললাইন পাতা হয়
মাইন পাতা হয়, পাশে তার
বাসর-বিছানা। ভৌতিক নিশানা
ঘোরে ফেরে, দৈবমতে বিস্ফোরণ ঘটে।
বেণি উড়ে যায়, পাখি ফিরে যায়
সরে যায় নদী, ঘর গেরস্তালি
সরে যায় মানচিত্রটাই।
বলেছিলে নিজদেশে যাবে !
কোন দেশে যাবে বলেছিলে?
সেই দেশ কতদূরে ছিল?
আপৎকালীন
একলা রাস্তার ধার, খুলেছি সরাইখানা
অনেকটা দূর বটে, শিবির উলটোদিকে
তাছাড়াও দায়, অনুগামীদের ধরে বেঁধে
রাখা। তবু কালেভদ্রে দেখা হবে আশা –
হায়! প্রতি কাকভোরে শুনি বদল ঠিকানা
অথচ তোমারই জন্য গড়েছি আস্তানা।
এইযে ট্রাজিক হিরো তুমি, কাহিনীটা জানা
দরবারে সব দিয়েছিলে, তবু সন্দেহবশে
ঘটে গেল দ্রোহ, ফসকে গিয়েছে রাজপাট।
তবে কি আদপ ইবাদত কম পড়েছিল?
এখানে ওখানে করেছিলে চোরা ফোঁসফাঁস
বিরুদ্ধ শিবিরে করেছ কি সৌজন্য তালাশ?
থাক, যেহেতু এখন সবই নিশ্চিন্ত অতীত
যেহেতু নির্বিষ স্মৃতিলুপ্ত তুমি, নির্দ্বিধায়
দিয়ে যাবে পর্যাপ্ত অন্তিম নজরানা, জেনো
তোমারই জন্য কিন্তু গড়েছি আস্তানা!
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন