গুচ্ছ কবিতা : অলোক বিশ্বাস

 




অলোক বিশ্বাস
----------------------

রাজনৈতিক শহর
------------------------

নদীকে ধমকাচ্ছে এই শহর। আলোকে চমকাচ্ছে এই শহর। রাজনৈতিক লাইন অনুসারে ঝড় মেঘ বৃষ্টি দেখাও আকাশ। এই শহরে বৃক্ষের শরীরে যেমন খুশি হস্তক্ষেপ করা যেতে পারে। এই শহরে ভালোবাসার সন্ধিক্ষণে চামড়া কারখানার গন্ধ মেশানো যেতে পারে। অস্ত্র ব্যবহারের আত্মপ্রীতিতে ভেসে যাওয়া শহর। কান্নার নিরবচ্ছিন্নতাকে রঙিন গল্পের রোমান্সে ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার ঔরসে যোগ্যতাময় এই শহর। এখানে বৃক্ষ আছে, বৃক্ষের হাতছানি নেই। হ্রদ আছে, হ্রদের আনন্দ নেই। কল্যাণী ধর্ষিত হয় এমত হ্রদের কিনারে...


পাখিকে ধরবে পুলিশ
-----------------------------

কোথাও আকাশ নেই, কেবল উঁচু উঁচু বাড়ি। একটি রঙিন পাখি উড়বে ব'লে খাঁচা খুলে বেরিয়ে গেছে। পাখিটির পিছনে ছুটছে শতেক কাক। পাখিটির পিছনে ছুটছে ধোঁয়ামাখা কোলাহল। পাখিটির পিছনে ছুটছে হৈ হৈ বিদ্রুপ ভরা হাসি। খাঁচা খুলে বেরিয়ে যাওয়া পাখিকে ধরবে ব'লে রাষ্ট্র জড়ো করছে পুলিশ...


নয়া সাম্রাজ্যবাদ
-----------------------

এক প্লেট পেয়ারা দিয়ে বললে, আপেল খাও। বললাম, এতো হাসনুহানা। যখন পেয়ারাকে তোমার কথামতো আপেল মনে করে খাচ্ছি, তখন বাইরে অপ্রাসঙ্গিক চ্যাঁচামেচি শুনতে পেলাম। তুমি বললে, রাজনৈতিক দলবদলের শব্দ হচ্ছে যার সঙ্গে পেয়ারার রূপবদলের কোনো সম্পর্ক নেই। আমি বললাম, এতো সাম্রাজ্যবাদের আরেক রূপ, যার সঙ্গে প্রকৃতির রূপান্তরের যোগাযোগ কোথায়। পেয়ারা থেকে আপেল কিংবা আপেল থেকে পেয়ারা অবধি যেতে যেতে হাসনুহানার ফাঁক দিয়ে দেখতে পাচ্ছি, রূপান্তরিত নির্ঝরের সঙ্গে, প্রিয়তম বাক্যদের সঙ্গে সাম্রাজ্যবাদের নতুন অস্থিরতা যুক্ত হয়ে যাচ্ছে। পেয়ারা বা আপেল খেতে খেতে রাজনৈতিক সন্ত্রাস খারিজ করতে পারছি না...