গুচ্ছ কবিতা : নিমাই চাঁদ জানা

 






নিমাই চাঁদ জানা


 অর্ধবৃত্তাকার পুরোহিত ও দীর্ঘায়ু শিলালিপি


অর্ধবৃত্তাকার রাত আর মৃত ময়ূরময় বিছানার নিম্নাঙ্গের উপর  বিসর্গ পুরুষগুলো হাঁটু মুড়ে বসে আছে দীর্ঘ শিলালিপি হয়ে
সন্ধ্যের আগে ক্লোরোফিলের প্রতিটি কোয়ান্টাম কণা পুরোহিতের বিবিধ খনিজ রেখে নিজের বৃত্তাকার গর্তের ভেতরে ঢুকে গেল আমি ক্রমশ প্রশাখাময় চৈতন্যময় শিরিষ গাছের তলায় জড়িয়ে ধরি জোনাকির ভূমি বেলপাতার তন্ময় যোগ
আমার নারী আমাকে অভিসারে নিয়ে যায়  , একটি কালো রঙের পতনোন্মুখ দড়ির কাছে নিয়ে যায় তাতে সাইক্রিয়াটিক বিষ মাখানো ছিল
ঝাউতলার প্রতিটি খাঁজে বসে থেকে উড়িয়ে চলি পাতাবাহার চিরহরিৎ উষ্ণীষ , সকলের জিভ থেকে তৃণভোজী গন্ধ বেরিয়ে আসছে
আমি এক মৃত শরীরী ঈশ্বর শিল্পালয়ে দাঁড়িয়ে এঁকে চলি সহস্র চোখ , স্তনবৃন্ত আর আঙ্গুলের ভেতর থাকা গহ্বর ,
কলম্বাসের সাথে একটি অম্বর দেশ সৃষ্টি করি শল্য চিকিৎসায়
মহা নিমগাছ একটি পরকীয়া ওষুধের নাম



 কাল্পনিক ইছামতি ও আকুন্দ ফুল


আমি যান্ত্রিক নাবিক হয়ে সমুদ্রের অতল গহ্বরের মন্থকূপ খুঁজে চলি , আজ বড় পিপাসার্ত লাগলো মাংসাশী প্রদাহ জনিত ক্ষত মুখে , সকলেই অবিভাজ্য পুরুষ মানুষ
শরীরকে কিছু রক্তের ভেতর নিজের কাল্পনিক চিহ্নগুলো এঁকে দিচ্ছি ওই অচ্যুত পাড়ের সহস্রাব্দ থেকে বেরিয়ে
আমার পূর্বজন্মের আত্মিক কোন আনন্দময়তাকে কি নামে ডেকে নিতে পারি চিরহরিৎ সুন্দরী নাকি এক মীরা অথবা ইছামতি আকুন্দ ফুল
বীজের অঙ্কুরোদগম চিহ্ন আমার বাড়ির প্রতিটি নৈঋতে রাখি প্রতিটি দাহস্থান' আছে জামরুল পাতার প্রচ্ছন্ন মায়াচর নিয়ে গভীর রাতে ধ্যানমগ্ন হয়ে আমি উড়ে উড়ে যাই ইচ্ছামতীর কাছে যে একা বাঁশি বাজিয়ে নিজেকে সাদা জবা করে তুলি
নৌকাটি প্রাচীন হতে হতে আরব্য সাগর হয়ে যায় আমাদের তখন
দশমিক সংখ্যারা যৌগিক হয়ে ঝুলে আছে আমার গলা কাটা পাঞ্জাবির নিচে



 ঈশ্বর ও কালিদহের জ্যোতিষী


কর্কটক্রান্তির সঙ্গম জড়িয়ে পড়ে চাতকের মতো জ্যোতিষী হয়ে একাই কপর্দকশূন্য হয়ে যান ঈশ্বর কালীদহের খেয়া ঘাটে এসে এখানে কোন বৈষ্ণব ও চন্দন নেই
আমি অ্যামিট্রিপটিলিন জিভে রেখে সহস্র ভঙ্গিল বালিয়াড়ি রচনা করি রাতের ভেতর
সবাই নিশাচর হয়ে যায় আমি একা বাবার হৃদস্পন্দনের দিকে চেয়ে দেখি , পুরুষেরা নির্বাক হয়ে যায় এক ধাতু ক্ষয়ের পর
আমি অবসন্ন পুরুষের মতো ধ্বজভঙ্গ নিয়ে বসে আছি বহুবর্ষজীবী ছায়া গাছের পায়ে আমার কোন জনন ছিদ্র নাই একাকী কালো রঙের নৌকা আমাকে নিয়ে রেতঃপাত ঘটিয়ে যায় বিবস্ত্র ময়ুরীরা ডানারা কতদিন একইভাবে চেয়ে আছে পাথরের মতো , তারা ক্রমশ রাত্রিবেলায় সারা বিছানায় হেঁটে হেঁটে বেড়ায় আমি তাদের একটুখানি রেবিপ্রাজল আর জল খেতে দেই

(৪) মায়াবী গাছ ও থার্মাল শুক্রাণু


আমি এক মাধবী গাছের তলায় সকালের জন্য এক শ্মশান রচনা করি , সকলেই বর্ষজীবী অথচ কোন ভূখণ্ড নেই
নিশাচর হয়ে যাওয়ার আগে আমি জিভে থার্মাল আগুন রাখলাম সকলেই কাল্পনিক হতে হতে শুঁয়োপোকার শুক্রাণু খেয়ে নিচ্ছি আমাদের এখন কিছু গন্ধরাজ ফুলের দরকার
আমাদের সহবাসকালে প্রতিটি শুঁয়োপোকা একটি মৃত জিরাফের লোমশ গাত্রদাহ থেকে বের করে আনে অশ্বত্থ বিকেল
কঙ্কালগুলো নেমে আসছে প্রতিটি জালিকাকার শিরাবিন্যাসের উপর , তিনটি গর্ভাশয় চিহ্নগুলো মৃদু কম্পন রেখে
পালঙ্কের  কাছে আড়মোড়া খেয়ে ঋতুচক্রের হিসাব লিখে রাখে তলপেট যন্ত্রণার ঔষধ গলাধঃকরণ করছে প্রশাখা হীন গাছের মৃতপ্রায় অঙ্গুরীমাল
মন্দির বলে যে ক্ষয়জাত ভূমি থাকে তার যোনিদেশে সহস্রাধিক শিল্পী ভিনিগার উচ্ছ্বসিত চুলের ভেতর ঢুকে যায়
পোশাকগুলো নিষিদ্ধ গন্ধে ডোবানো আমরা ল্যাকেসিস ঠোঁট দিয়ে কামড়ে ধরি জরায়ু
আমরা পাস্ট পারফেক্ট টেন্সের বিনীত উপপাদ্যগুলো ঝুলিয়ে রাখি আগুনের জীবাশ্মের উপর , আমরা সকলেই ক্যারোটিন গন্ধ নিয়ে বেঁচে আছি
কৃমি কীটেরা আমার বাম পাশে নৈঋত নৃত্য করছে