গুচ্ছ কবিতা : হামিদুল ইসলাম

 





হামিদুল ইসলাম।


  সমুদ্র জানালা 

                         

ঠিক কতোটা সময় 
ঠিক কতোটা সাঁতার দিয়ে 
তুমি পেরিয়ে আসো রোদের উঠোন। উঠোনে তখনো পাতা থৈ থৈ    ।।

ঠিক কতোটা আঁধার নেমে এলে 
তুমি দেখে নাও সুখ 
জলে ডোবা জীবন। আমার যৌবনের প্রথম রোদ্দুর   ।।

ঠিক কতোটা ছায়ায় 
তুমি ফেলে আসো শিফন বাড়ি
মাটির শৈশব
বৃষ্টিধোয়া জলে ভ্রূণগুলো কথা বলে অনেক নীচে সমুদ্দুর    ।।

আমি বার্তাহীনা নৌকোর মাঝি 
প্রতিদিন ফেরি করি হৃদয়। বার্তাগুলো হেঁটে হেঁটে আসে গরম ভাতের মায়ায়    ।।

শরীর শরীর গন্ধ 
বার্তা বয় নদী 
প্রেয়সী জমিনে ফিরে আসে রুখু রুখু মুখ। সমুদ্র জানালা সারি সারি     ।।


  চাঁদ 

কালের স্রোতে ভাসে ছায়া 
ছায়া ছায়া প্রাণ 
আমরা প্রতিদিন ঈশ্বর ভজনা করি গানে ও কথায়   ।।

আদতে ঈশ্বর আমাদের চেনা চেনা নাম 
ঈশ্বর আমাদের অচেনা মুখ 
কথায় কথায় ঈশ্বরকে টানাটানি। ঈশ্বর কথার নান্দীমুখ    ।।

তবু বৃষ্টি নামে
ঝড় নামে ইরাবতী কার্নিসে 
আমরা আজান দিই গীতা আওড়াই। আমরা হয়ে উঠি বিমূর্ত ভবিষ‍্যৎ   ।।

ইতিহাস এখন বগলদাবা 
দুমুঠো বীজধানে গড়ি শস‍্যক্ষেত    ।।

হাওয়ার দোলাচলে পড়ে থাকে সবটুকু চরাচর 
নিঃস্ব আমি পেছন ফিরে আসতে আসতে হারিয়ে ফেলি শূন‍্য প্রান্তর    ।।

নিকানো উঠোনে তখনো জেগে থাকে পূর্ণিমার চাঁদ     ।।


 ভাবনা

ভাসমান যা কিছু পার্থিব 
চলে যায় নিজের কক্ষপথে 
যা কিছু সুখ যা কিছু দুঃখ সাজিয়ে রাখি সান্ধ‍্য উঠোনে 

পাখির নীড়ে আকাশ মাপি 
একা ঘর দোর স্মৃতিগুলো প্রতিদিন চেতনা হয়ে ভাসে 

কাগজের নৌকো। সারি সারি নাভিপদ্ম
জিরাফ হয়ে মুখ তুলে কখনো শাসায় 
জেব্রা ক্রসিং আকাশে আমরা মুখ মুছি সভ‍্যতার দেয়াল বরাবর 

জ্বলে জ্বলে অশ্বপুরুষ 
জল থেকে তুলে আনে শাপলা শাবক। বাতাসের শনশন 

আমরা মরার আগে মরে ভূত হই সন্ত্রাসী উত্তাপে