সম্পাদকীয় : শ্রাবণ সংখ্যা : চন্দ্রদীপা সেনশর্মা

 



সম্পাদকীয়
----------------

              চন্দ্রদীপা সেনশর্মা
              -------------------------

"সাজনওয়া সাওন বীতা জায়ে..."


লক্ষ্মী শঙ্কর আর নির্মলা দেবীর গলায় ঠুংরিটি
শুনতে থাকি। লক্ষ্মী শঙ্করের গলায় ঝরে পড়ে
একইসঙ্গে দক্ষিণী ও উত্তর-ভারতীয় পরম্পরা।
পাতিয়ালা ঘরানার শিক্ষা এবং ঠুংরির অসামান্য
গায়কি ধরা পড়ে নির্মলা দেবীর কণ্ঠে। লক্ষ্মী
শঙ্করের নৃত্যগুরু উদয়শঙ্কর, পণ্ডিত রবিশঙ্করের
সঙ্গে তিনি দেশে-বিদেশে অনুষ্ঠান করেন। তিনি
ওঁদের ভাতৃবধুও। নির্মলা দেবী অভিনেতা অরুণ
আহুজার স্ত্রী। তাঁর পুত্র গোবিন্দা হিন্দি সিনেমার
জনপ্রিয় অভিনেতা।

হঠাৎ সম্পাদকীয়তে এঁদের নিয়ে পড়লাম কেন?
কারণ এই ঠুংরি। পরবর্তী সময়ে  অনেকে
গাইলেও লক্ষ্মী শঙ্কর এবং নির্মলা দেবীর মতো মন
ছুঁতে পারেননি কেউ। গানের কথা পরম্পরা মেনে
খুব সুন্দর। দুঃখ আর্তি অভিমান ছোট ছোট শব্দে
ভারী চমৎকার তুলে ধরা হয়েছে। প্রেমের চিরন্তন
আবেদন। যুগ বদলে গেলেও সেই আবেদন থেকে
সত্যি কি আমরা বেরোতে পেরেছি? ঘন শ্রাবণমেঘে
আবৃত সূর্য। মাঝেমাঝে ছায়ার ভিতর থেকে আলো
ফুটে ওঠে। কখনও আলো কখনও ধূসর। জীবনের
মধুর এবং বিষণ্ন খেলা। ঠুংরির সুরে গায়কিতে,
ঘনঘোর শ্রাবণে, প্রেমিককে কাছে না পাওয়ার
বেদনায় মিশে থাকে অতীতের প্রাপ্তিটুকু। যা যায়
তা থাকেও, সব কি মুছে যায়? সব কি পাওয়া হয়?
অসামান্য ঠুংরিটি গুনগুন করে চলি। সরে যায়
মেঘ, বিরহে। পুনরায় সম্মিলিত হয়, হর্ষে। ঝরে
পড়ে কান্নায় অবিরাম।

'And the cloud floats above the hills and valleys
Until it meets the gentle breeze, and then weeping
To the fields and joins with brooks and rivers to
Return to the sea, its home.'
                         ----Khalil Gibran


ঠুংরির সুর: আব্দুল রহমান খান। তবলা: উস্তাদ
নিজামুদ্দিন খান।