১৪০০ সালের শ্রদ্ধার্ঘ্য : দিলীপ কুমার/ মুহম্মদ ইউসুফ খান(১৯২২-২০২১)

 



১৪০০ সালের শ্রদ্ধার্ঘ্য

দিলীপ কুমার/ মুহম্মদ ইউসুফ খান(১৯২২-২০২১)
--------------------------------------------------------------------

তাঁর সময় সিনেমায় যেখানে-সেখানে ১০/১২/১৬
টা গান রেখে দেওয়া হতো। গান আলাদা করে
ভালো হলেও সিনেমার গতি নষ্ট করার জন্য
একশোভাগ দায়ী ছিল। ক্যামেরা স্থবির, যা
নড়াচড়া অভিনেতা করবেন। ক্যামেরা জ়ুম করলে
মাথা বা মুখের অংশ কেটে যায়। এত প্রতিবন্ধকতা
দিলীপ কুমারের অভিনয়কে একটুও দমাতে
পেরেছে কি? পারেনি। সংলাপে তাঁর অনন্য
উচ্চারণ, যতি, অর্থাৎ কোথায় কতটুকু থামতে হবে,
অভাবনীয় মুগ্ধতার আবেশ রচনা করত। সংলাপ
ছাড়া চোখ আর ঠোঁট কথা বলে দিত। ঠোঁট টিপে
হাসি, সঙ্গে গভীর অন্তর্ভেদী দৃষ্টি! বিয়োগান্ত
সিনেমা করার জন্য তাঁকে ট্র্যাজেডি কিং বলা
হতো। তিনি ভারতীয় সিনেমার অবিসংবাদিত
রাজা। পরবর্তীকালে প্রায় প্রত্যেক নায়ক তাঁকে
অনুকরণের প্রয়াস করেছেন, চেতন বা অবচেতনে।
তাঁর সিনেমার সংখ্যা মাত্র ৬০/৬২(মতান্তর আছে)।

তপন সিনহার নির্দেশনায় সাগিনা-মাহাতো ফিল্মে
দিলীপ কুমারের অভিনয় বাঙালি দর্শকের হৃদয়
জিতে নিয়েছিল আরও বেশি করে। ভালো
পরিচালকের নির্দেশনায় ভালো অভিনয়, আর খুব
সাধারণ মানের সিনেমায় অভিনয় করা বা
বাণিজ্যিক ফিল্মে অভিনয় করা একইরকম
কঠিন। দিলীপ কুমার সর্বত্র সফল হয়েছিলেন।
সারল্য ব্যক্তিত্ব চারুতা শ্রেষ্ঠতা সব শব্দ মিলেমিশে
একাকার হয়ে যেত তাঁর অভিনয়ে। তাঁর প্রথম
সিনেমা 'জোয়ারভাটা'। অন্দাজ়, আন, আজ়াদ,
দাগ, যোগন, নয়া দৌড়, দেবদাস, কোহিনুর,
মধুমতী, মুগ়ল-এ-আজ়ম, গঙ্গা-যমুনা, রাম অউর
শ্যাম তাঁর উল্লেখযোগ্য সিনেমা। ১৯৭৬ এ প্রৌঢ়
বয়সে, ক্রান্তি, শক্তি, কর্মা, সওদাগর সিনেমায়
তাঁর অভিনয় অতুলনীয়।

অন্দাজ় এবং আন সে সময়ের সবথেকে হিট
সিনেমা ছিল। মুগ়ল-এ-আজ়ম ১১বছর ধরে
প্রেক্ষাগৃহে চলেছিল। দিলীপ কুমার ফিল্মফেয়ার
পুরস্কার পেয়েছেন ৮ বার। তিনি এই পুরস্কারের
প্রথম প্রাপক। ভারতীয় সিনেমাজগতের সর্বোচ্চ
সম্মান, দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারও তিনি
পেয়েছেন। ভারত সরকারের পদ্মবিভূষণ এবং
পাকিস্তান সরকারের নিশান-এ-ইমতিয়াজ় সম্মানে
তিনি সম্মানিত হয়েছেন।

'অলবিদা' তাঁকে বলা যায় না। ভালোবাসা ইউসুফ
খান, প্রিয় দিলীপ কুমার। শান্তিতে শুয়ে থাকুন।