অগ্রহায়ণ সংখ্যা-বাণীব্রত চক্রবর্তী

মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২০ /
ফেসবুক-এ শেয়ার করুন /
টুইটার-এ শেয়ার করুন

 | ১৪০০ সাল পত্রিকা








রাকা  

সন্ধ্যায়  অকাল বৃষ্টি  এল। টিপ টিপ। রাকা দাঁড়িয়ে  রইল। 
তার  ব্যাগে ছাতা আছে। ব্যাগেই রইল।সে বৃষ্টি  চাইছিল।
 বৃষ্টি  এসেছে । ভিজবে। হৃদয়ে আগুন । তাই।
 ক্রমশ আকাশ  আরও  কালো হয়ে উঠছে। বৃষ্টি  এখন  দামাল।
 তবু রাকা ছাতা বার করল না । 
 ব্রিকরেড রঙের  গির্জার  সামনের  পেভমেন্টে দাঁড়িয়ে  পাগলের  মতো ভিজছে।
 বড়রাস্তায় একটাও মানুষ  নেই ।
কেবল  একটি  ট্রাম যাচ্ছে । কামরার জানলাগুলি বন্ধ । একটা  ক্যারিবিয়ান  ব্লু রঙের  গাড়ি  ঠিক  তার পেভমেন্ট ঘেঁষে দাঁড়াল।
গাড়ির  ভেতর থেকে  জানলার কাচ নামিয়ে কেউ  তাকে  ডাকছে । রাকা ! রাকা !
  রাকা ভিজছে। পাগলের  মতো। অসভ্যের মতো। হৃদয়ের  আগুন  নিভছে না।
 গাড়ি  থেকে এক যুবক নামল।
ওর নাম পর্জন্য। রাকাকে নিয়ে  গাড়িতে  তুলল।
পর্জন্য ভিজে গেছে । তবে রাকার মতো নয়। রাকা সিটে  বসে রইল । বৃষ্টিসিক্ত পাথরের  পরির মতো। পর্জন্য সিটে ঢাকা  দুটি  তোয়ালে  এগিয়ে  দিল, "তাড়াতাড়ি জল মুছে ফ্যালো।" তারপর সে পেছনের  দরজা  খুলে নামল।
 সামনের দরজা  খুলে গাড়িতে  উঠে  স্টার্ট দিল।
 আবার  একটা  ট্রাম যাচ্ছে ।সব জানলা বন্ধ । 
এখন  বৃষ্টি  একটু   কম । পর্জন্য লুকিংগ্লাস দিয়ে  রাকাকে দেখতে  পাচ্ছে ।
 তোয়ালে  দিয়ে  এলো চুল মুছছে।এরপর  মুখ  মুছবে।
 আবার  সে আয়নার  দিকে তাকাল। রাকার চোখে - মুখে আর জল নেই । তবে বসন সিক্ত এবং  আর্দ্র । মুখে  নিরাপদ প্রশান্তি।
কী হয়েছিল  রাকাকে জিজ্ঞেস  করলে উত্তর পাওয়া  যাবে না । গাড়িটা রাস্তার  একধারে  পার্ক করে পর্জন্য জিজ্ঞেস  করতে পারে ।
তক্ষুনি অভিমানিনী রাকা দরজা  খুলে রাস্তায়  নেমে যাবে । বৃষ্টি  এখনও থামেনি।
গির্জার  সামনে রাকাকে একঘন্টা ওয়েট করতে হয়েছে । পর্জন্যকে ফোন  করেনি।
 পর্জন্য ছ'মাস সমুদ্রে।জাহাজে। বাকি  ছ'মাসের মধ্যে  ওদের  দেখা হয় কম। ডাঙাতেও পর্জন্য ব্যস্ত।মেরিনে বড় ব্যস্ততা ।
 আজ রাস্তা  ছিল  জ্যাম। তারপর টায়ারও ফেঁসে গিয়েছিল । ফোন  করে  জানাতে সাহস পায়নি।ও বড় অভিমানিনী।
 পর্জন্য গাড়ির  স্পিড বাড়াল।
Attachments area