অগ্রহায়ণ সংখ্যা-বর্ণালি বিশী

মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২০ /
ফেসবুক-এ শেয়ার করুন /
টুইটার-এ শেয়ার করুন

 | ১৪০০ সাল পত্রিকা









দিল্লি কা লাড্ডু


--আরে! এত ফাস্ট পিক লোড বিয়ের মন্ত্র শেষের আগেই! একখানা নয়, দু-খানা নয়--চল্লিশখানা!
কাঁচাপাকা দাঁড়িতে হাত বুলাতে বুলাতে একগাল হেসে বলল 'যোগা সেন্টার' এর মধ্যমণি 
পিন্টুদা। তার আসল নাম পিনাকীকুমার বেরা। কিন্তু সবার মুখেই পিন্টুদা।

ডেস্ক ঘিরে চেয়ারে গোল করে বসার মধ্যে থেকে যোগার এক তরুণী ট্রেনার পম্পাদি তখনই
উৎসুক গলায়-- হেব্বি লাগছে বল!

--আরে বস, ধুতিখানা দেখো! এক্কেবারে টকটকে লাল! চটপট উত্তর কিশোর টিটোর। সামনের
মাসে তার পালা। তাই নিজের মাথায় টোপর ভাবতেই লাজে রাঙা মুখ ফসকেছে। কথাটা মাছরাঙার
মত ছোঁ মেরে তুলে পিন্টুদা চুটকিতে--আরে বস্...! তোমার আর কটা দিন! হুঁ-হুঁ...

--কই দেখি দেখি বলতে বলতেই মিনতিদি, পিন্টুদার ফোনটাকে নিজের দিকে টেনে নিল। নিপাদি
টানল এবার নিজের দিকে। টিনা সেন্টারে ঢুকেই বাড়াল হাত ওই একই কাজে। সবাই একসাথে
পিন্টুদার মোবাইল নিজের দিকে টানাটানিতে ব্যস্ত। তখন পিন্টুদার মোটা গলার আওয়াজে ফোনটাকে
একটা অ্যাডজাস্টমেন্ট জায়গায় রাখা গেল।

চল্লিশোর্ধ্ব মিনতিদি চশমার উপর দিয়ে চোখ রেখে পান চিবোতে চিবোতে বাতলালেন

--চন্দনের ফোঁটাটা জব্বর দিলেও, পাঞ্জাবির গ্লসিটাতে সাজটা মার খাচ্ছে! ভেতরে দগদগিয়ে
উঠছে তার সদ্য নিজের ডিভোর্স। মনে মনে বলল, দিল্লি কা লাড্ডু! খেয়ে দেখো!

শানু একচোখ দেখেই ছুঁড়ে দিল মন্তব্য-- চোখের ডাক্তার দেখাও মিনতিদি।

খুশির রোশনির সাথে হাসির ফোয়ারা যখন জমপেশ, ঠিক তখনই ব্যাগ নিয়ে ঢুকল বছর তিরিশের
যুবতী। আজকের গণ্ডগোল দেখে হতভম্ব দাঁড়িয়ে রসগোল্লা চোখে জিজ্ঞাসা-- কতনম্বর রুমটায়
যাব? পিন্টুদা তার আপাদমস্তক হালকা চোখ বুলিয়ে আদেশ দিল-- ৪ নম্বরে যান। পম্পাদি যাচ্ছে।

অগত্যা পম্পাকে চেয়ার ছাড়তেই হল প্যাঁচামুখে! বিয়ের ফটোগুলো যেন তার মনটাকে টেনে রাখল।
বিয়ের বয়স হলেও সংসারের হাল টানার জন্য হয়ে ওঠেনি। বয়স্ক বাবা বাড়িতে আর কেউ নেই।
যতই ঝামেলা থাক...না খাওয়ার চেয়ে খেয়ে পস্তানোই তো ভালো! পম্পার ভেতরে গুনগুনাতে
লাগল। বিরক্ত স্বর আওড়াল-- এক-দুই-তিন...