গুচ্ছ কবিতা : রঞ্জনা ভট্টাচার্য্য

 






রঞ্জনা ভট্টাচার্য্য


চৈত্র মাসে


ইচ্ছেগুলো কে ন্যাপথ্যালিনে মুড়িয়ে

ট্রাঙ্কে রেখে দিও, পোকায় না কাটে, 
 গোধূলির আলো ছোপানো  ক্লান্তি
আলমারির গায়ে ঘষটে আছে, 
একান্ত মুহূর্তে শীতের চাদর টেনে দিও
তার গায়ে, চৈত্রের সন্ধ্যায় আমি আয়না
দেখি না, বলিরেখাময় ইচ্ছে গুলোকে
উল্টে পাল্টে  দেখি, চোখের কাজল দিয়ে
নজর ফোঁটা দিই, তারপর পলেস্তারা খসে
পড়া মনের দেওয়ালে তাকে টাঙিয়ে রাখি
কস্তা পেড়ে ধুতি পড়িয়ে... 
তুমি বরং তাদের ন্যাপথালিনে মুড়ে
ট্রাঙ্কে রেখে দাও, পোকায় না কাটে... 


অনাকাঙ্ক্ষিত


চোখের জল আঠা দিয়ে লাগিয়ে দিলাম গাছের বাকলে, এক একটা কাঁচা ফল ছিঁড়ে নিলে গর্ভপাত হয়, একতারা
প্রেমে ঝাপসা চশমার কাচে পিছলানো  বিষাদ, স্বপ্ন বাউলের গানে বিন্দু কিরণমালা  হলে, কাঁচা উপড়ানো ফলে
বৈরাগ্যের ধারাপাত, কোথাও মৃত্যু নেই, 
উপুড় হয়ে শুধু শোক  পড়ে থাকে, জলবিভাজিকা ছুঁয়ে থাকে লিপ্ত সুখের
নির্লিপ্ত শব।



ঠিক এইখানে



ঠিক এইখানে ভাঙা সাইকেল, 
আর  সারেং এর টুপি পড়ে থাকে, 
অথচ বালিকার হাতে উদ্যত হারিকেনের
আলো ঋতুস্নাত ধানক্ষেত ছাড়া কেউ দেখে না কোনোদিন, 
ঠিক এইখানে শুদ্ধতম ছাই নিয়ে পড়ে থাকে পৌরাণিক আলো, 
অশান্ত লন্ঠন দপ করে জ্বলে উঠে নিভে যায়, 
তৃষ্ণার্ত শ্মশানে প্রেমের আলতা পা 
আধপোড়া শরীরে জড়িয়ে রাখে 
সমুদ্র ঘ্রাণ আর সাইকেলের ঘন্টার আওয়াজ।