■ খেলার ছলে
অর্ঘ্য দে
তিরের ফলায় নামিয়ে আনবে আপেলসূর্য
উপহার দিতে প্রেয়সীকে আগামী বসন্তে
ওরা যুবকদল, খেলার ছলে ফুঁকছে তূর্য
ওরা দাঁড়িয়ে আছে বয়ঃসন্ধির উপান্তে।
সূর্য থেকে খসে গেলে আলোর বুড়ো দেবতা
তুষারশুভ্র অভিশাপ; করুণ ঊষরতা
হিমের শিকল বাঁধবে উদ্ধত রুধিরগতি
জানে না, অকেজো তখন পশমের উদারতা।
ভুলে গিয়ে শিকড়ের টান হয়তো অভিমানে
শিমুল তুলোর মতো বৈধব্য উড়বে একান্তে
কিছু তির বিমর্ষ, তখনও থেকে যাবে তূণে
অলোককণার তপস্যায় মগ্ন দিনান্তে।
■ জার্নাল
আমার ফুলস্বপ্নের ভিতর ঢুকে পড়েছে
কথা হারানো প্রজাপতি
নির্জন খামার, মুহুর্মুহু সান্ধ্য হাওয়ায়
অদ্ভুত এক ছন্দে
খসে যাচ্ছে রেণু আর বংশগতির প্রবণতা।
অভুক্ত চাষি আর চাষি-বৌ
আধখোলা চিঠির মতো পৃথিবীর বুকে
নবান্নের বীজ হাতড়াচ্ছে।
হাওয়ায় নিমপেঁচার আর্ত ডাকাডাকিতে
কোনও গান পূর্ণ হচ্ছে না।
■ গ্রামযাপন
এক
হিমে ভেজা অশথপাতা বড় শান্ত, নিঝুম
ফাঁকে ফাঁকে হাঁসেদের সরলরেখার পথ
আমার চোখের অপসারী আলোয়
নেমে গেছে ধীর পায়ে ঘোলা পুকুরে।
বিসর্জনের ঢাক বাজে না কথাও,
হাঁসের মিছিল জল ভেঙে ভেসে যায়
যেন ঘরের মায়া ভুলে যাওয়া সন্ন্যাসী
মহানিস্ক্ৰমণের পথে।
অবিকল সুপ্তির চেহারায় কয়েকটা ডিম
কুড়িয়ে নিই জীবনের ওম
ভালো থাকার অজুহাতে।
দুই
রেডিয়তে অনুরোধের আসর আর
কার্তিকের মোলাম একটা দুপুর নিয়ে
বেঁচেবর্তে আছে আস্ত একটা গ্রাম
কী ভীষণ নিরুপদ্রবে অহিংসায়।
হাওয়ায় আমন ধানের সুখবর
নূপুরের মতো থেমে থেমে নিক্কন তুলে যায়।
বাঁশঝাড় থেকে একটা মাত্র বাঁশির আবেদন
পড়ন্ত বেলায় খারিজ হয়ে যায় বারবার।
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন