মৌ দাশগুপ্ত
লাবণ্যবিন্দু
-- লাবণ্যবিন্দুটি গোল, কেবলই গড়ায়...
-- উহারে ধরিবে যে, সে-কোন্ মুদ্রায়?
-- বরাভয়মুদ্রা, প্রভু, তাহার সম্বল...
-- ভূমিস্পর্শমুদ্রা কেন নহে? -- সেও বল,
নহে কেন অন্য কোনো মুদ্রা -- শান্ত স্থির?
-- লাবণ্যবিন্দু যে শিশু, প্রভু !... নহে বীর,
নহে দৃপ্ত, ধুক ধুক করে মাত্র বুক --
এতটুকু ক্ষুদ্র প্রাণ, ছোট্ট কচি মুখ,
উহারে রাখিলে ভুঁয়ে পিপীলিকা খায়...
ভূমিস্পর্শমুদ্রা তাই কীরূপে বাঁচায়
সদা-সদ্যোজাতটিরে? উহা ক্রোড় চাহে --
অনন্ত প্রশ্রয় যেথা খেলে পায়ে পায়ে --
লাবণ্যবিন্দু সেথায় নিরাপদে থাকে --
হাসে খেলে নাচে গাহে ধুলামাটি মাখে...
বরাভয় দিন প্রভু, বাঁচা'তে উহারে --
উহার আহার ভাসে আহ্লাদ-পাথারে...
ভূমিগত স্পর্শ রুক্ষ, মুদ্রার ঝংকার
লাবণ্যবিন্দুরে করে কেবলই প্রহার...
উহারে কাটিতে দিন অনন্ত সাঁতার --
লাবণ্যবিন্দুই পদ্ম... হৃদি পারাবার...
স্থির
কিছু দূর যাইতেই ট্রেন, বড় প্রশ্ন পায় তার --
বমির মতন সেই উৎকট প্রশ্নের উদ্বেগ --
কী করিলে স্বস্তি হয়, কীসে যায় অশান্তি আবার...
আছাড়ি পিছাড়ি খায়, চেন টানে, কমে আসে বেগ...
থামিতে থামিতে ট্রেন পিছাইয়া আসে তিন পদ...
মাত্র তিন পদ পূর্ব স্থান থেকে এমন স্বস্তির !
সেই স্থানে থামিতেই শান্ত হয় উদ্বেগ আপদ,
সে বমি করে না তাও বোধ করে অনেক সুস্থির...
কে যেন ঘোষণা করে, এই ক্ষণে ছাড়িবেক গাড়ি --
মূর্খের স্বর্গ ইহা... মুহূর্তে দিতে হয় পাড়ি --
ঢং ঢং ঢং ঘন্টা বাজিতেই ট্রেন গেল ছাড়ি...
জনশূন্য প্ল্যাটফর্ম, সেই একা নামে তাড়াতাড়ি
এ-স্টেশনে প্রশ্ন নাই -- অনুত্তর প্রসন্নতা স্থির --
গতি নাই... শান্ত এক তার শুধু কাঁপে তির তির...
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন