গুচ্ছ কবিতা : বনশ্রী রায় দাস

 





 বনশ্রী রায় দাস


দুঃখী আলো 
                  
হাঁমুখে বেশ কয়েকটি রাত টাঙিয়ে রেখেছে 
জেগে থাকে নগর কীর্তনের হৈমন্তীক সুর ।

হেলে পড়া দেয়ালের গায়ে গুহাচিত্রের ঘাম
কুপির দুঃখী আলোটাও নিভিয়ে দিল কেউ !


বুকের গভীর প্রদেশ থেকে একটি রাস্তা 
ঠিকানাচ্যুত হয়ে মিশে যাচ্ছে হাহাকারে ।
        



মেঘ থেকে জল পড়ে না 
       
অন্ধকারে রহস্যের জট পাকিয়ে যায় শুধু
বাতিস্তম্ভের তলে ভিজছে চোখ জোড়া ,
অপেক্ষার বয়স বাড়ে ঘাসের হলদেরঙে।

জুলাইয়ের বিকেল ঘড়ির কাঁটা সরিয়ে ...
সদ্য প্রসূতির দুধ জমে ওঠা বুকের মতো
এখনও কেন টনটন করে ওঠে বাম দিক ?

আচ্ছে দিন আর ফিরবে না বলেছে ডলিদি
মেঘ থেকে জল পড়ে না এখন, রক্ত ঝরে ।

         

কসাই 
                    
তখন ছোট্টটি মনের সুখে নরম ঘাসে লুটোপুটি 
টানাটানা চোখে নীহারিকা খেলা 
ত্বকের তৈলাক্ত থেকে উঁকি দেয় ফিদাহুসেন 
শরীরময় মৃগনাভি ফুলের সুগন্ধ 
বন থেকে তুলে নিয়ে এলে তাকে, মায়া-হরিণী 
চুম্বনে চুম্বনে রামধনু রাখলে তার চোখে ঠোঁটে 
আদরে আদরে লজ্জা পেয়ে নেমে আসে চাঁদরেণু তারাদের হিরণ্ময় স্রোত,  
কিশোরীকাল পেরিয়ে ঋতু ডেকেছিল যেদিন 
নিজস্ব নদীতে কানায় কানায়    

যাকে প্রেমের নৌকো দিলে তাকেই হত্যা করতে 
উদ্যত হলো তোমার ছুরিকা   
চোখ রক্তজবা, হিংস্র হয়ে উঠলো দাঁত,নখ
তার রক্ত মাংস হাড় চিবিয়ে খাওয়ার জন্য 

ঠিক বিশ্বস্ত প্রেমিকার অ-বিশ্বস্ত প্রেমিকের মতো । 
             --------------------------------