ধারাবাহিক উপন‍্যাস : বাণীব্রত চক্রবর্তী

 





 বাণীব্রত  চক্রবর্তী


ধারাবাহিক  উপন‍্যাস

               কালতরঙ্গ

         
                       আট

আবার  একটা  সিগারেট ধরাল  কিঞ্জল। প‍্যাকেটে একটাই ছিল। এখান থেকে  বেলবার  সময়  ইসমাইলের দোকান থেকে এক প‍্যাকেট চারমিনার কিনতে হবে।
       কফি হাউসের  মেনগেট দিয়ে  ঢুকে  প্রথমে চোখে পড়ে ইসমাইলের পান-সিগারেটের দোকান।  তারপর  শুরু হয়েছে  সিঁড়ি। একদিন  যে সিঁড়ি দিয়ে  উঠে আগ্রহী মানুষের দল সিস্টার নিবেদিতার বক্তৃতা  শুনতে  অ‍্যালবার্ট হলে  গিয়েছেন সেই  হল পরবর্তী কালে কলেজ স্ট্রিটের কফি হাউস। 
        মীরা  জানে কিঞ্জল কেমন ছেলে। মিছিমিছি ওকে সে ভুল ভাবছে। এই ধরনের ছেলেরা কখনও  পিসতুতো-মাসতুতো বা মামাতো বোনের প্রেমে পড়ে না। ফিক করে হেসে হাত বাড়িয়ে  কিঞ্জলের একটি  হাত স্পর্শ করল। কিঞ্জলের অন‍্য হাতে  আঙুলের ফাঁকে জ্বলন্ত সিগারেট।
      মীরা বলল,  " তোর কাছে তো আর সিগারেট  নেই। ওটাই  দে। "
শখ হলে  মীরা কখনও  কখনও  স্মোক করে। এমনকি কিঞ্জলের হাত  থেকে  সিগারেট  ছিনিয়ে নিয়ে  দু-একটা টান মারে। এখন  কিঞ্জল মীরার দিকে সিগারেট  এগিয়ে  দেয়। মীরা পরপর দুটো টান দেয়। খকখক করে কিন্তু  কেশে ওঠে না। ধোঁয়া  গেলে এবং  উদ্ গিরণ করে। তারপর  সিগারেট  ফিরিয়ে দেয়।
      কিঞ্জল বলে, " জেঠু ক্রমশ  যেন কেমন হয়ে যাচ্ছেন। ছেলেমানুষের মতো ভাবেন একদিন  না একদিন তৃষ্ণা তাঁকে ফোন করবেন। "
     মীরা বলল,"  উনি তৃষ্ণার  খোঁজটোজ করে কিছুই  কি জানতে পারেননি! " কিঞ্জল বলল, " না। বকুলদি তো সেরকমই  বলেছিল।" বকুলদি নামটা শুনে এবার  কিন্তু মীরার রাগ হল না। কিঞ্জল বলল," ধর ,.  জেঠু কোনও কাজে বেরিয়েছেন। কয়েক ঘন্টা পর বাড়ি  ফিরে  প্রথমেই জিজ্ঞেস করবেন, " আমাকে  কেউ কি ফোন করেছিল ?' এই কথাটা। " মীরা  বলল, " ওঁর ফোন তো কারও ধরার কথা নয়! তাহলে! " কিঞ্জল বলে, " বাড়ি থেকে বেরবার সময়  কেবল আমার মা-কে বলে যান, ' কেউ যদি ফোন করে তবে রমলা তুমি সেই ফোন ধরবে।' এই হল ব‍্যাপার। '
     মীরা  অবাক দৃষ্টিতে কিঞ্জলের দিকে  তাকিয়ে থাকে।