গুচ্ছ কবিতা : শীতল চট্টোপাধ্যায়

 







শীতল চট্টোপাধ্যায়


ভাগ্যিস


বাঁকুড়ার জংগলে
চটা টানতে -টানতে
একটা মানুষ হাঁটছে ,
এই পৃথিবীর একটা মানুষ ৷
গাছ বলা গল্প ওর বুকে ,
ভাগ্যিস সভ্যতা চেনেনি , লোকটা !


সর্ষে ফুলেরা

একদিন মেয়েটাকে ডেকে
কপালে হলুদ টিপ পরিয়ে দিয়ে ,
হাতে দিয়েছিল হলুদ ফুল ,
চোখে বইয়েছিল হলুদ স্রোত ,
আদর দিয়েছিল হলুদ বাতাসে ,
মায়ের মতোই গালে দিয়েছিল
হলুদ চুমু ,
সর্ষে ফুলেরা ৷



একটু অপেক্ষা

কাদা মাটিতে রোয়া হয় মন ৷
শিকড়ে - শিকড়ে বাড়ে
স্বপ্ন প্রসারতা ,
ফিকে থেকে গাঢ় সবুজে রূপান্তরিত
কল্প প্রাণ ,
স্বপ্ন ধারকের বিনা তেলের
রুখু চুল ছোঁয় বাতাস ,
ধানের যৌবন দুলে বলে -
একটু অপেক্ষা আর !


বুনো গন্ধের গ্রাম


রাতে শহর ঘুমোয় ,
ঘুমোয় - শহর থেকে অনেক দূরের
বুনো গন্ধের গ্রাম ৷
গাবিন ছাগলের চিৎকারে
স্বামীকে ঠেলে তোলে বউটা ,
ছাগলটা প্রসব করল বোধহয় !
সকালে নতুন বাচ্চা দেখতে যাওয়া
গোয়াল ঘরে-
বাঘের পায়ের ছাপ শুধু ৷


শ্বাস

নদীটার থেকে শ্বাস তুলে
নিজের জীবন শ্বাসে জোড়ে
দুখু মাঝি ৷
ওই তোলা শ্বাসেই বাঁচায় মেয়ে - বউ ,
নদী জল থেকে তোলা শ্বাসেই
আগুনের শ্বাস বাড়ে
রান্নামেলায় উনুনের ৷