সাত
মীরা জিজ্ঞেস করল, " তারপর ?" কিঞ্জল তক্ষুনি কোনও উত্তর দিল না। স্যান্ডউইচটা শেষ করে ঢকঢক করে জল খেল। এরপর মীরার দিকে তাকাল, " কী হল! হাত গুটিয়ে বসে রইলি কেন! খা। " মীরা বলল, " খাব। আগে শুনি তোর জেঠুর কথা। " কিঞ্জল বলল, " খেতে খেতেও শোনা যায়। এদিকে ইনফিউশন ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে ।" তবু মীরা খাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয় না। বলে, " আগে শুনি। তারপর ।"
কিঞ্জল বলল, " তৃষ্ণা হারিয়েই গেলেন। আমি বাড়ির মধ্যে সবচেয়ে ছোট। বাড়িতে কেউ আমায় জেঠুর প্রেমকাহিনি বলেন না। মীরা হাত বাড়িয়ে একটা স্যান্ডউইচ নেয়, " তবে কার কাছ থেকে শুনলি তোর জেঠুর প্রেমকাহিনি!" কিঞ্জল বলল, " আমার পিসতুতো দিদি বকুলদির কাছে। ওর শ্বশুরবাড়ি ফেডারেশন স্ট্রিটে। বকুলদি আমার চেয়ে ঠিক সাত বছরের বড়। ওর বয়স সাতাশ বছর। তবে বকুলদি আমার বন্ধুর মতো। " কথাটা মীরার একেবারেই পছন্দ হয় না। গম্ভীর মুখে বলে " প্রায়ই বকুলদির বাড়িতে যাস। তাই না! আর উনি প্রায়ই তোদের বাড়িতে আসেন! "
কিঞ্জল মীরার মুখের চেহারা দেখে বুঝতে পারে বেথুনে পড়া এই মেয়েটা নির্ঘাত চটে গেছে। এবার কিঞ্জল হো হো করে হেসে ওঠে, " তুই কী ভাবছিস বল তো! আমি বকুলদির সঙ্গে প্রেম করি! পিসতুতো দিদির সঙ্গে প্রেম! " মীরা এখনও গম্ভীর, " হতেই পারে। এমন কত হয়। মানুষের অসাধ্য বলে কিছু নেই। এই তো কয়েক দিন আগে মানুষ চাঁদে পা দিল। ভুলে গেলি! " কিঞ্জল বলল, " এটা ১৯৬৯ সাল। বিজ্ঞান ক্রমশ মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে....।" ওকে থামিয়ে দিয়ে মীরা বলল, " সেইসঙ্গে পিসতুতো মাসতুতো বোনের সঙ্গে প্রেম বেড়েই চলেছে। "
" কফি ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে " কথাটা উচ্চারণ করে মীরা পেয়ালায় চুমুক দেয়।
কিঞ্জল বলে," তোকে একদিন বকুলদির কাছে নিয়ে যাব। মেয়েরা এক পলক দেখেই বুঝতে পারে কে কার প্রতি অনুরক্ত। " মীরা চুপ করে থাকে। আবার কফিতে আর একটি চুমুক দেয়।
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন