ধারাবাহিক উপন‍্যাস : বাণীব্রত চক্রবর্তী

শনিবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২২ /
ফেসবুক-এ শেয়ার করুন /
টুইটার-এ শেয়ার করুন

 








বাণীব্রত চক্রবর্তী



ধারাবাহিক  উপন‍্যাস


                 কালতরঙ্গ


                    সাত

মীরা জিজ্ঞেস করল, " তারপর ?" কিঞ্জল তক্ষুনি কোনও উত্তর দিল না। স‍্যান্ডউইচটা শেষ করে  ঢকঢক  করে জল খেল। এরপর  মীরার দিকে তাকাল, " কী হল! হাত গুটিয়ে  বসে রইলি কেন!  খা। " মীরা বলল, " খাব। আগে শুনি তোর জেঠুর কথা। " কিঞ্জল বলল, " খেতে খেতেও শোনা যায়। এদিকে ইনফিউশন ঠান্ডা হয়ে  যাচ্ছে ।" তবু মীরা  খাওয়ার জন্য  ব‍্যস্ত হয় না। বলে, " আগে  শুনি। তারপর ।"
        কিঞ্জল বলল, "  তৃষ্ণা  হারিয়েই গেলেন। আমি  বাড়ির মধ্যে  সবচেয়ে ছোট। বাড়িতে কেউ আমায় জেঠুর প্রেমকাহিনি বলেন না। মীরা হাত বাড়িয়ে একটা স‍্যান্ডউইচ নেয়, "  তবে কার কাছ থেকে শুনলি তোর জ‍েঠুর প্রেমকাহিনি!"  কিঞ্জল বলল, " আমার  পিসতুতো দিদি  বকুলদির কাছে। ওর  শ্বশুরবাড়ি  ফেডারেশন স্ট্রিটে। বকুলদি আমার  চেয়ে ঠিক  সাত বছরের বড়। ওর বয়স সাতাশ বছর। তবে বকুলদি আমার বন্ধুর মতো। " কথাটা মীরার একেবারেই  পছন্দ  হয়  না।  গম্ভীর  মুখে  বলে " প্রায়ই  বকুলদির বাড়িতে  যাস। তাই না! আর উনি প্রায়ই তোদের  বাড়িতে  আসেন! "
   কিঞ্জল মীরার মুখের  চেহারা দেখে বুঝতে পারে  বেথুনে পড়া এই  মেয়েটা নির্ঘাত চটে গেছে। এবার কিঞ্জল হো হো করে হেসে ওঠে, " তুই কী ভাবছিস বল তো! আমি বকুলদির সঙ্গে প্রেম করি! পিসতুতো দিদির সঙ্গে  প্রেম! " মীরা  এখনও গম্ভীর, " হতেই  পারে। এমন কত হয়। মানুষের  অসাধ‍্য বলে কিছু নেই। এই তো কয়েক দিন আগে মানুষ  চাঁদে পা দিল। ভুলে গেলি! " কিঞ্জল বলল, " এটা ১৯৬৯ সাল। বিজ্ঞান  ক্রমশ  মানুষকে এগিয়ে নিয়ে  যাচ্ছে....।" ওকে থামিয়ে দিয়ে  মীরা বলল, " সেইসঙ্গে পিসতুতো মাসতুতো বোনের সঙ্গে প্রেম বেড়েই চলেছে। "
   " কফি ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে  "  কথাটা  উচ্চারণ করে মীরা পেয়ালায় চুমুক দেয়।
     কিঞ্জল বলে," তোকে একদিন  বকুলদির কাছে  নিয়ে  যাব। মেয়েরা  এক পলক দেখেই বুঝতে  পারে কে কার প্রতি অনুরক্ত। " মীরা  চুপ করে থাকে। আবার  কফিতে আর  একটি চুমুক  দেয়।