দুটি কবিতা : বিকাশ চন্দ





 



বিকাশ চন্দ


অদৃশ্য আলাপন


রাস্তায় ছড়ানো অক্ষর স্বাধিকার ছুঁয়ে শতাব্দী ছায়া
নির্বিকার অজস্র উচ্চারণ স্পর্শ হীন উদারতা ছড়িয়ে 
অসাধ্য অঙ্গীকার ডানা ছেঁড়া পাখি আটকে শূন্য ফাঁদে
লাট খাচ্ছে শরীর শূন্যতায় মহাকাল একা উত্তরণে

কৌশল কতটা ফেক জানে বোমা বারুদের পসরা 
দেয়ালে ঠোক্কর খেয়ে স্থপতি ফেরে নিজেকে খোঁজে 
ফিরে যায় চরাচর জাপটে নোনা বাতাস খরা বন্যা
লজ্জা বস্ত্র ছিঁড়ে বেরিয়ে আসে দগদগে শরীর 
অশুভ আরাধনায় কেমন ফুটিয়ে তোলে দৈব আয়ু
আকালেও বেঁচে থাকে ক্ষমা প্রেম পরম সন্ন্যাস সময়

প্রান্তিক মাটি ছুঁয়ে নেচে ওঠে আত্মীয় বাস্তুভূমি 
অজস্র মুখের সারি নীরব পরিণাম শূন্যেরও অতীত 
অনেক অন্ধকার চোখ খোঁজে আলোর পরিত্রাণ 
অবসন্ন পায়ের তলায় কেঁপে ওঠে আজন্ম উদাসীন মাটি
আশাহত চোখে পাক খায় শ্যামল ভূবন জীর্ণ বট
মিশে যাচ্ছে অজস্র মিথ্যাচার ঝরা পালকের ভাসানে
অচেনা একঝাঁক মানুষের আশ্চর্য উড়ান অন্ধের মতো 
ঘূর্ণি পাকে অদৃশ্য আলাপন জড়িয়ে সভ্যতার মায়া জালে


কষ্ট কাঁটা পাথর


অহরহ হৃদয় বাসর জড়িয়ে পুরুষ পাথর কেমন 
প্রাণের ভাষা ভেসে যায় তৃষ্ণা কাতর ভাঙা অমৃত কলস 
বিপন্নতায় জেগে ওঠে ছিন্ন করে প্রত্ন মূর্তি যুগল
সাম গান ঢালে কান্নার কনকাঞ্জলি অকৃপণ অনুরাগে
নগ্ন দেহে আন্তঃছায়ায় ছয়লাপ সকল ঋতু প্রহর 
মোহন স্নিগ্ধতা জানে জন্মের ভেতরে ও জন্ম কাল
কেবল বৈরাগী প্রাণ শরীরটুকু ছুঁয়ে সুর তোলে 
কখন সে ভিক্ষু বিছানায় একা দেউলিয়া জীবন

রাতের শেষে জড়িয়ে বাঁচে আত্মার জলছবি 
রক্ত ছড়িয়ে অতিথি সৎকার অস্থির শ্বেতকরবীর জ্বালায়
অদৃশ্য শূন্যতায় উদ্যত  হিরণ্ময় প্রহর গুনছে আলাপের 
প্রাণের দোসর জড়িয়ে বিদায় বেলা জানে হৃদয়ের ভার যত
স্মৃতিনাশা সময়ে ভেসেছে আত্মার মানব মানবী একান্তে
বনানী মুগ্ধতায় বাকল সরিয়ে লেখে অজানা সঙ্কেত
অলৌকিক আল্পনা খুঁজে দেখে আদিম সৃষ্টি কাতর 
বুকের ভেতর গুমরে আছে আজও কষ্ট কাঁটা পাথর