তিনটি কবিতা~মুরারি সিংহ

 নবরূপে১৪০০ সাল | | শারদীয়া সংখ্যা | 

মুরারি সিংহ







ভ্যাবাচ্যাকা অপেরার নতুন যাত্রাপালা

এক-জন-আমি যখন কথা বলছি, তখন আরো একগুচ্ছ আমি

এদিক ওদিক ছোটাছুটি করছে, ফুটবল খেলছে,

পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতার কাটছে

অথবা ন্যাড়া-ছাদে ঘুড়ি ওড়াতে ওড়াতে চিৎকার করে উঠছে

ভো-কাট্টা,

এটাই তো জীবন, হে কর্ড-লাইন লোকালের গালগল্প

এটাই তো অরিজিন্যাল বেদেনির কাছে পাঠানো

আত্মসমর্পণের ভিতর

পাশবালিশ জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ার মজা

বুঝে গেছি বুঝে গেছি বুঝে গেছি

গভীর নলকূপের ক্যানভাসে ফুটীয়ে তোলা জীবন মানে

সখি গো, কালা গো, আর ভ্রমরা গো…

বানান-ভুলের ভাঁজে ভাঁজে বয়ে যাওয়া উবুদশের মানেও

এঁড়েগোরু আর মুড়োঝাঁটা…

পলাতক কবন্ধগুলির খোঁজে ঘেঁটুফুলের এত তছনছ

যেন কোনো নষ্ট অন্ধকারে ফুটে থাকা পদযাত্রায়

বৃষ্টিভেজা লাট্টু ও লেত্তির সংলাপ

উর্বশী-মেনকাদের বশ মানানোর জন্যে

বেনোজলে ভেসে আসা শনির কবজকে

পেটপুরে ঘটি-গরম খাওয়াচ্ছি

ভ্রমণকারীর রক্ত থেকেও খামচে নিয়েছি বিস্তর রসকলি,

এখন ভেবে দেখো

ভ্যাবাচ্যাকা অপেরার নতুন যাত্রাপালার কী নাম রাখা যায়

শীতলপাটি ছুঁয়ে বয়ে যাওয়া অজস্র গাধাডাকের সামনে

হাঁটু গেড়ে বসলেই

কত যে পায়ের শব্দ ছুটে আসে

আস্তাকুঁড়েয় ছুড়ে ফেলা

আধো-জাগা করোটির দিকে

অসম্পূর্ণ নিশিপদ্মের মার্কশিটে খানিক উঁকি মেরে যায়

অনেক যোগ-চিহ্ন, অনেক বদ্বীপ,

অন্তঃসত্তা নদীর গল্পে অগভীর নলকূপের অনেক বরবাদ

ও-পাড়ার মোড়ে বিশুর দোকানে

সকালবেলার চা-বিস্কুট খেতে আসে

বাঁশবনের সন্ধি-সমাসে উপচে পড়ে

ঋতু-বালিকার ইন্দ্রজাল

তুমি কি চিত্রকর, তুমি কি ভাস্কর, অথবা

তুমি কি নিশিডাকে পথ-হারানো কোনো সিনেমাওয়ালা

তাহলে মানো অথবা না মানো,

এইসব অ-সংবাদের ডালে ডালে

বিস্তর পাখি বসছে, ফুল ফুটছে, ভিড় করছে মৌমাছিরা