| নবরূপে≈১৪০০ সাল | | শারদীয়া সংখ্যা |
প্রশ্নোত্তরে কালীকৃষ্ণ গুহ : চন্দ্রদীপা সেনশর্মা

কালীকৃষ্ণ গুহ :--তুমি হয়তো বলতে চাইছ আমি ভারতীয় রাগরাগিণীর শাস্ত্র-নির্দেশিত সময় মানি কি না!
অবশ্যই মানি। এ বিষয়ে আমার চর্চা নেই বলে প্রশ্ন তোলারও কোনো অধিকার আমার নেই। রবীন্দ্রনাথ অনেক সময় (তা অবশ্য খুব কম) এই সময় মানেননি, কিন্তু মনে রাখতে হবে তিনি তো বিশুদ্ধ শাস্ত্রীয় সংগীত রচনা করেননি! তিনি এ বিষয়ে সচেতন ছিলেন বলে বলেছিলেন যে তিনি অনেক দৌরাত্ম্য করলেও ভারতীয় রাগরাগিণীর আকাশের নীচে বসেই তিনি সংগীত রচনা করেছেন। তিনি গড়ে তুলেছিলেন তাঁর নিজস্ব আকাশ!
চন্দ্রদীপা : আপনি খুব ভালো গদ্য লেখেন।আপনার কাছ থেকে এখনও একটি উপন্যাসের আশা পাঠক করেই থাকেন। এ বিষয়ে কিছু বলুন।
কালীকৃষ্ণ গুহ : "ভালো গদ্য" লেখার সঙ্গে উপন্যাস লেখার কি খুব সম্পর্ক আছে? আসলে এখন আর উপন্যাস লেখার বয়স নেই।কোনো-কিছু লেখারই আর বয়স নেই। তবু, কিছু হবার নয় জেনেও তো লিখছি!
চন্দ্রদীপা : ছন্দের কবিতায় আপনি তির্যক মিল ব্যাবহার করেন, তির্যক মিল নিয়ে আপনি বুঝিয়ে বলুন।
কালীকৃষ্ণ গুহ : অনেকেই করেছেন আমার আগে। সম্প্রতি প্রয়াত কবি বিমান মাহাতো অসম্ভব ভালো ভাবে এ জিনিস করেছে। যেমন,
ঘুম ভাঙিয়ে এলোকেশীর
দুপুর রাতে চা খেয়েছি।
চায়ের সঙ্গে আর কী ছিল,
ঝড় ওঠে খুব সত্তাবিলোপ।
এখানে কেশীর সঙ্গে খেয়েছি-র এবং কী ছিল-র সঙ্গে বিলোপ অসাধারণ সার্থক মিল যদিও তা তির্যকভাবে এসেছে।
চন্দ্রদীপা : যে আত্মদীপ জ্বালানোর কথা আপনি বলেন, লেখার জন্য, আজকাল তরুণ প্রজন্ম কি সত্যি সেভাবে লেখার সময় পায়? নিজেকে ফিরে দেখার সময়টুকু তাদের আছে? অসংখ্য বই পড়ে এবং সবার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে গিয়ে জীবনের দৌড়ে তারা কী বা করতে পারে--
কালীকৃষ্ণ গুহ : আত্মদীপ ভব, বলেছিলেন বুদ্ধ আড়াই হাজার বছর আগে। এই একটাই উপায় ভালো লেখার বা ভাবার। আজকের তরুণদের হাতে হয়তো সময় কম। তবু যারা লিখতে চাইবে (শুধু দৌড় ঝাঁপ করে বেড়াবে না তাড়াতাড়ি নাম করার জন্য) তারা সময় খুঁজে নেবে, নিজের ভিতরে নিজের জগৎ খুঁজে নেবে। তবে এজন্য ধ্যানে বসতে হবে না, শ্রেষ্ঠ সাহিত্য কষ্ট করে পড়তে হবে,যতটা সম্ভব, দেশের এবং বিদেশের। সেই সঙ্গে পড়া উচিত বিশ্বসভ্যতার ইতিহাস, দর্শন ও বিজ্ঞানের অগ্রগতির ইতিহাস। বললাম বটে, এত পড়াশোনা করে শুরু করতে হবে না। (নিজেও তা করিনি।) লেখার সঙ্গে পড়াশোনাও চালিয়ে যেতে হয়। একজন লেখকের জীবন হলো একজন পাঠকের জীবন।
খুব ভালো লাগলো
উত্তরমুছুনখুব ভালো লাগলো।আরো চলতে ত্থাকুক এই কথোপকথন। ধারাবাহিকভাবে।
উত্তরমুছুন