রাজেশ্বর গোপাল
মায়াটান,
দূর...বহুদূর...
ঘনত্ব বাড়িয়ে যখন আরও একটি মায়াটান
ফুলে ফেঁপে ওঠে
তোমার চোখে অপ্রত্যাশিত ধুলো
নদীজল মুছে,পার্থিব শুষ্কতায়
ফুটিয়ে তোলে বালিরেখা....
কত কাল তুমি বিস্বর্গ আকাশ ছুঁয়ে
প্রাচীন ইতিহাস কাঁধে দাঁড়িয়ে আছো
কত ঝড় তুফান সয়ে গেছো, কত রোদ- তাপ
তবুও অভিযোগ তোলোনি কখনো
যদি ছোট থেকেই শিখে নেওয়া যায়
বেঁচে থাকা মানে ছায়া ছায়া স্বভাব
রোদ রোদ আলো ;
টিকে থাকা মানে বিষ জ্বালা পান,অমৃতের দান
তির্যক বালিয়াড়ি হোক কিংবা বার্খান নতুবা
ক্ষয়ে যাওয়া অলোলুপিত চাঁদ
ক্ষয়িষ্ণু বাতাস ধরে গড়ে তোলে জলঢিবি
মায়াস্রোতে ভেসে যায় দূর
বহুদূর....
পোস্ট মর্ডান
আলোর উৎস ; অন্ধকারের শেষ সীমানা
এতসব নিয়ে হইচই কেন?
ঐ যে অন্ধ মেয়েটি
কালো রুমাল বেঁধে চোখে
সরু দড়ির উপর পার হয়ে যাচ্ছে মহাশূন্য,
পায়ে পায়ে মেপে রাখছে আলোর গভীরতা
এটা কি করে সম্ভব?
আঁধারে বসে সূর্যস্তব না'কি
চোখ ধাঁধানো আলোয় ডুবে অন্ধত্বের নিশানা!
এত আলো কোথায় পেল সে?
যে কেউ প্রেম থেকে ফিরে আসা মানেই
যদি বিষ পান হয়
তবে আমিও অমরত্ব কে তাচ্ছিল্য করছি
আপ্রাণ স্বর্গে যাওয়ার সাধ।
কিন্তু আজকের এই হিপ-হপ প্যান্ডামিক
বার বার সহস্রবার হার্ট-ক্রসিং যুগে
কেউ কি দেবে একটুকরো সহমরণের ব্রত?
সম্মোহন
গত বসন্তের মেলায় রঙ বাহারে
ফুটে উঠেছিল নরম গাল, মুখ
আপন ঔরসে মৃদু হাসির ঠোঁট ঝলকে উঠেছিল
অথচ এ বসন্তে তার যেন
চোখের মেঘে কালো বৃষ্টির হরফ
এটা হওয়ার ছিল; যেটা হওয়ার ছিল না
সেটা গোধূলি ও সন্ধ্যার সম্পর্ক, আলোর দরজা
হেঁটে যাওয়া পথ, জুতোর ফাটলে ছুঁচালো পাথর
আর দু-এক পশলা বৃষ্টির গান....
সন্ধ্যা গড়িয়ে নামলে বাড়ি ফেরার পথ হয় কুয়াশামুখর
এবার মন বদলের দরকার।
সে বসন্ত আর এ বসন্তের মধ্যে মিল কোথায়?
সব পালটে গেছে----- সাজ, রঙ, গান
কেবল বলতে পারি
পুরোটাই রবীন্দ্রসঙ্গীত ছিল
ক্রমশ শরীর থেকে মুছে যাচ্ছে আবির রং
চামড়ায় ছিন্ন প্রাচীন ইতিহাস,
শিরায় অন্ধকারের সাম্রাজ্য বিস্তার শুরু....
পুরনো মুখভঙ্গি আর ধনুকের মত
বাঁকা আইব্রো'র গতিবিধি রেখে দিলাম খাতার পাতায়
ঘুমোবার আগেই চাই চুরুট
ভুলে যাওয়া! সে তো আর মুখের কথা নয়....
শেষ স্টেশন
হালকা হোক কিংবা গভীর
সব যন্ত্রণাই একসময় ফুরিয়ে আসে, থেমে যায়
যেমন শেষ স্টেশনের পরে
আর কোন গন্তব্যের ঠিকানা থাকে না
থাকে না যাত্রাপথ, থাকে না চলার গতি
এরপরেই অন্ধকার আসে
কখনো চাঁদ কিংবা গভীর কালো আকাশ
সঙ্গে কারোর করমচা রঙের হাত,
ওষ্ঠ বিচ্ছুরিত হাসি
খুব চেনা কেউ তবু অচেনার মত
খুব স্পর্শ শিহরিত অথচ অস্পৃশ্যের মত
দূরে চলে যায়
অনন্ত বিপথগামী শূন্যতায় বেড়ে ওঠে দু-হাত
সম্প্রতি উলটানো পৃষ্ঠায়
চোখ খসে পড়ে, থরথর কেঁপে ওঠে ঠোঁট
এখন আমার মন খারাপ দিয়েই ঢেকে রাখি
সব গোপনীয়তা
রঙের বুটিক....সাঁঝবেলার গল্প...আলোর চিৎকার!
কথকতা
সশব্দ বাতাসে স্পন্দিত কোলাহল জনশ্রুতি
ধ্বনির মধুরতায়, ছন্দের ঝংকারে মন ভোলাতে পারি না
নীরবতা দিয়ে নিজেকে মোড়ায়
'তুমি কেমন আছো'
---এখন এটাই আমার সবচেয়ে জরুরী খবর।
রুপকথার গল্প শুনেও শিউরে উঠিনা, অবাক হয় না
প্রায়ই অবলুপ্ত আনন্দের শেষ সীমায় গিয়ে
ফিরে আসি পুনরায়
প্রেম অপ্রেম দিয়ে সেজে ওঠে জয়-পরাজয়,
আত্নগ্লানির বৈভবে মৃত্যু প্রায় অকঠিন কঙ্কালে
বাকরুদ্ধ হেসে ওঠে ঘুণধরা হাসি....
'তুমি ভালো আছো'
---এখন এটাই আমার সবচেয়ে সুখের খবর।
রাতভর চোখের পাতায় আড়াল দিয়ে
সাত সমুদ্র ভাবলেও আর স্বপ্ন আসে না ;
ঘুমের আবডালে চোখ ছুঁয়ে নেমে আসে 'শুকতারা'
নব পল্লবে ঢেউ খেলে যায় রাত্রির কথকতা
গুনগুন, হিমস্পর্শ....
বাহ্ বাহ্! দারুণ। খুব ভালো লাগল। বিশেষভাবে 'শেষ স্টেশন'।
উত্তরমুছুনঅনেক ভালোবাসা ও ধন্যবাদ জানাই আপনাকে দাদাবাবু ❤️
উত্তরমুছুনসর্বাত্বক সুন্দর অন্তর পোষন কাব্য মালা
উত্তরমুছুনঅনেক অনেক ভালোবাসা ও সশ্রদ্ধ ধন্যবাদ জানাই আপনাকে দাদাবাবু ❤️
উত্তরমুছুনসব কটি লেখা সুন্দর। একটা সুর বেজে ওঠে। ছুঁয়ে গেল।
উত্তরমুছুন